শীতকালে ত্বকের যত্ন : শুষ্ক ত্বক।

শীতে শুষ্ক ত্বকের কারণ ও প্রতিকার।

ত্বকশুষ্কতা বা চর্মশুষ্কতা বা ইংরেজি পরিভাষায় জেরোডার্মা ("জিরোসিস কিউটিস" নামেও পরিচিত) মূলত শরীরের বহিরাংশ সংক্রান্ত একটি বিশেষ খারাপ অবস্থা, যা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে নিরাপদেই চিকিৎসাযোগ্য ইমোলিয়েন্টস অথবা ময়েশ্চারাইজার দিয়ে এটি ঠিক হয় । জেরোডার্মা সংঘটিত হয় মূলত মাথার খুলিতে, পায়ের নিচে, বাহুতে, হাতে, গিঁটে, তলপেটের প্বার্শে এবং উরুতে। জেরোডার্মার পূর্ব লক্ষণ সমূহের মধ্যে রয়েছে ফুলে উঠা (বাইরের ত্বকের স্তরের খোসা দৃশ্যমান হওয়া), চুঁলকানি এবং ত্বক ফাটা।

হাতের ত্বকশুষ্কতা : সাধারণ কারণ সমূহ

ত্বকশুষ্কতা হলো একটি অত্যন্ত সাধারণ অবস্থা। এটা প্রধানত শীত কালের দিকে বেশি হয় যখন ঠান্ডা বাতাস বাইরে থাকে এবং গরম বাতাস ভেতরে থাকে যা একটি নিম্ন সম্পর্কযুক্ত আদ্রর্তা ব্যবস্থা তৈরী করে। এই কারণেই ত্বক তার আদ্রতা হারায় এবং এটা ফেটে যেতে পারে কিম্বা কোন যায়গা উচু হয়ে যেতে পারে। গোসল অথবা হাত ধৌতকরন বারবার করলে, বিশেষত যদি কেউ খসখসে সাবান ব্যবহার করে, তাহলে তার ত্বকশুষ্কতা হতে পারে। ত্বকশুষ্কতা ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি এর অভাবে অথবা নিয়মিত স্বাস্থ্যহানী, কড়া রৌদে থাকলে অথবা কোন বিশেষ ঔষধের প্রভাবে হতে পারে। ত্বকশুষ্কতা কোলাইন নিরোধকের কারণেও ঘটতে পারে। ডিটার্জেন্ট যেমন ওয়াসিং পাউডার এবং ডিসওয়াসিং তরলের কারণে জিরোডার্মা হতে পারে।

সুরক্ষা

জার্মান ফার্মাসিউটিক্যালস কর্তৃক উৎপাদিত ত্বকের ক্রিম নেভিয়ার উন্নতির পরপর ১৮০০ শতকের শেষের দিক থেকে, বিশ্ববাজারে বিপুল সংখ্যাক আর্দ্রতা বিষয়ক ত্বকের প্রসাধনির আগমন ঘটছে। আজ অনেক ক্রিম আর লোশন যাকিনা সব্জি তেল/বাটার, প্রেটোলিয়াম তেল/বাটার এবং এমনকি লেলোলিন থেকে উৎপাদিত হচ্ছে এবং বিপুল পরিমানে পাওয়া যাচ্ছে। প্রতিরোধক হিসাবে ব্যবহার করার নিমিত্তে এসকল প্রসাধনি আক্রান্ত স্থানে লাগিয়ে ঘষতে হবে প্রয়োজনমতো (প্রায় প্রতিদিন) যাতে করে ত্বকের শুষ্কতা ধরে রাখা যায়।

নিরাময়

আমোল্লিয়েন্ট অথবা স্কিন লোশন/ ক্রিম বারবার লাগানোর ফলে (বিশেষ করে বেশ কয়েকদিন) আক্রান্ত স্থান খুব দ্রুত সেরে যায়। বিশেষত, আদ্রর্তার সমস্যার জন্য খুব কঠিন অভেদ্য পর্দা, যেমন প্রেটোলিয়াম, ভেজিটেবল ওয়েল/বাটার, এবং খনিজ তেল প্রয়োগের ফলে খুব ভালো ফলাফল পাওয়া যায় মর্মে দেখা গেছে। অনেকে আবার খুজে নেয় তার পছন্দের বিশেষ কোন বাণিজ্যিক ত্বকের ক্রিম এবং লোশন (সাধারণত সেটাতে থাকে তেল, মাখন, এবং অথবা আঠালো পানি) যা অত্যন্ত কার্যকরী (যদিও বাণিজ্যিকভাবে পাওয়া বিপুল পরিমাণ ক্রিমের ভেতর থেকে ব্যক্তিগত উদ্দ্যগে বেছে নেয়া পছন্দ সমূহ এবং সেগুলি ব্যবহার করার ফলাফল সমূহ ভিন্ন ভিন্ন হয়)। ল্যনোলিন, এমন একটি প্রাকৃতিক মিশ্রণ যা কিনা ভেড়ার লোম থেকে পাওয়া তরল, যা মানুষের ত্বকের আদ্রর্তার পরিপুরক হিসাবে কাজ করে যা প্রাচীন কাল থেকে ব্যবহৃত হয়ে আসছে এবং ত্বকশুষ্কতা সমস্যার বিরুদ্ধে পথ্য হিসাবে অন্যতম শক্তিশালী। যদিও বিশুদ্ধ লেনোনিল একধরনের পুরু ঘন বস্তু হওয়ায় , অনেক ব্যাক্তির জন্য তা ব্যবহার করা কঠিন হয় এবং শুষ্ক ত্বকে ব্যবহারের জন্য অসুবিধাজনক (বিশেষত ত্বকের বিশাল এলাকায় লাগাতে হলে)। যার করনে লেনোলিনকে পরিবর্তন করে, অনেকেই এটাকে একটু নরম করে ফেলেছে বিশুদ্ধ নেলোনিলের তুলনায়।

Next Post Previous Post