নাৎসি পার্টি ও নাৎসি পার্টির কর্মসূচি।

নাৎসি পার্টির প্রেক্ষাপট আলোচনা কর। নাৎসি পার্টির কর্মসূচি কি ছিল?

নাৎসিবাদ

নাৎসিবাদ বিংশ শতাব্দীর ইতিহাসে বহুল আলােচিত একটি বিষয়। পৃথিবীর সর্বকালের সেরা একনায়ক উগ্রজাতীয়তাবাদী জার্মান নেতা হিটলারের নেতৃত্বে জার্মানিতে যে নাৎসিবাদের জন্ম হয়েছিল, তার চরম বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মধ্য দিয়ে। নাৎসি জার্মানির জন্ম একদিনে হয়নি। দীর্ঘদিনের সাধনা আর পরিশ্রমের মাধ্যমে অস্থিতিশীল নাংসি জার্মানির বিশ্ব আসরে অপ্রতিদ্বন্দী শক্তি হিসেবে জন্ম হয়েছিল। বিসমার্কের (১৮৬২-১৮৯০) নেতৃত্বে আধুনিক জার্মানি যে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছিল তার আবসান ঘটেছিল প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের মাধ্যমে। ভাইমার প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। ভাইমার প্রজাতন্ত্রকে কোনাে রাজনৈতিক দল সমর্থন না দেয়ায় জার্মানিতে অভ্যন্তরীণ বিদ্রোহ চরম আকার ধারণ করে। তাছাড়া সরকারি কর্মচারীদের অসহনশীল মনােভাব ও অসহযােগিতা, প্রজাতন্ত্রের বিরোধীদের সাথে সেনাবাহিনীর যোগাযােগ, অর্থনৈতিক মন্দা, বেকার সমস্যা- এই সকল কারণে ভাইমার প্রজাতন্ত্রের নেতা ফ্রেডেরিক এবাটের পক্ষে অসম্তব হয়ে দাঁড়িয়েছিল এক সময়কার প্রভাবশালী জার্মান সাম্রাজ্যকে পরিচালনা করা। অপরদিকে, এইসকল অভিযােগে জনগণের সেন্টিমেন্টকে কাজে লাগিয়ে জার্মানিকে তার হৃতগৌরব ফিরিয়ে দেয়ার স্বপ্ন দেখাল নাৎসি দল, যার নেতৃত্বে ছিলেন হিটলারের মতাে একজন উগ্রজাতীয়তাবাদী নেতা । বিংশ শতাব্দীতে জার্মানিতে যে 'নাৎসিবাদের' জন্ম হয় তা হিটলার কিংবা নাৎসিনেতাদের মৌলিক কোনাে মতবাদ নয়, পুরনো কিছু মতবাদের বিরোধিতা এবং অন্য কতকগুলাে মতের সমর্থনকেই নাৎসিদলের মূল সঞ্চালক শক্তিরূপে গণ্য করা যায়। নাৎসিবাদ যে সকল মতবাদের বিরোধী ছিল, সবগুলাে হলাে, উদারতাবাদ, যুক্তিবাদ এবং মার্কসবাদ। উনবিংশ শতাব্দীর ক্রান্তিলগ্নে এবং বিংশ শতাব্দীর শুরুতে জার্মানি আর অস্ট্রিয়ায় এক ধরনের আন্দোলন গড়ে উঠেছিল যার লক্ষ্য ছিল একক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা, এবং যার ভিত্তি হবে আর্যরক্ত, ভাষা হবে জার্মান এবং যা হবে সকল ধর্মীয় বিশ্বাসমুক্ত। নাৎসিবাদ এই সকল মতবাদ দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল। নাৎসিবাদ সম্পর্কে The world Book of Encyclopedia- তে বলা হয়

Nazism was a part of the fascist movement, One of the aims of the Nazi Party was to strengthened German military power and to extend German control throughout the world. The Nazis believed in extreme nationalism and in the superiority of the white people of northem Europe over all other peoples.

অন্যদিকে international encyclopaedia of social sciences বইতে বলা হয়েছে...

Nazism is the name given to the beliefs and practices of the National Socialist German Workers Party, once led by Adolf Hitler. The term Nazi is an abbreviation of the German name for the party-

National Sozialistische Deutsche Arbeiter Partie থেকে ইংরেজিতে যাকে বলা হয়- National Socialist German workers Party

নাৎসি পার্টির কর্মসূচি

এই নাৎসিদের মূল চেতনা ছিল- আর্য রক্তে জার্মানরাই ইউরােপের তথা বিশ্বের সেরাজাতি । সুতরাং তারাই সারা বিশ্বকে শাসন করবে। আর এই উদ্দেশ্য পূরণের জন্যই নাৎসি নেতা হিটলারের নেতৃত্বে জার্মানরা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সংঘটিত করে এবং লক্ষ লক্ষ প্রাণহানি ঘটায়। হিটলার তার আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ 'মাইন ক্যাম্প'-এ (Mein Kampf) নাৎসি দলের ইশতেহার সম্পর্কে বিস্তারিত আলােচনা করেছিলেন। তিনি উল্লেখ করেছেন ১৯২০ সালে জার্মান শ্রমিক সংঘ এক জনসভার আয়ােজন করে। উক্ত জনসভায় পঁচিশ দফা সম্বলিত নাৎসি পার্টির এক ইশতেহারও প্রকাশ করা হয়। ওই ইশতেহারটি ছিল নিম্নরূপ

  1. আত্মনিয়ন্ত্রণাধিকারের ভিত্তিতে এবং বৃহত্তর জার্মানির অধীনে সমস্ত জার্মানজাতিগুলাে একত্র করা;
  2. অন্যান্য জাতির সঙ্গে কাজ করার বেলায় জার্মানজাতির সমমর্যাদা দাবি করা;
  3. জনসাধারণের লালন পালনের জন্য এবং বাড়তি জনসংখ্যার আবাসিক সমস্যার সমাধানের জন্য বাড়তি ভূমি ও উপনিবেশ তৈরি করা;
  4. জার্মান না হয়ে কেউ জার্মানি রাষ্ট্রের নাগরিকত্ব দাবি করতে পারবে না, আর জার্মান রক্তের অধিকারী না হলে কেউ জার্মানজাতির সদস্য বলে দাবি করতে পারবে না। তাই কোনাে ইহুদিই জার্মানজাতির অন্তর্ভূক্ত নহে;
  5. কেউ যদি জার্মানি রাষ্ট্রের নাগরিক না হয় তাহলে তাকে অতিথি হিসেবে জার্মানিতে বাস করতে দেয়া যেতে পারে এবং সবসময়ই বিদেশি আইনের আওতায় থাকবে;
  6. সরকার ও আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে কেবল রাষ্ট্রের নাগরিকদেরই ভােটাধিকার থাকবে;
  7. রাষ্ট্র তার নাগরিকদের জীবিকা অর্জন ও শিল্পের উন্নতির ব্যাপারে নজর দেয়াকে প্রথম কর্তব্য হিসেবে নেবে। যদি রাষ্ট্রের সকল নাগরিকদের লালন পালন করা সম্ভব না হয় তবে সকল বিদেশিকে অবশ্যই বহিস্কার করত হবে।
  8. যারা জার্মান নয়, তাদের জার্মানিতে যে কোনাে প্রকার প্রবেশ বন্ধ করতে হবে। যে সমস্ত অনার্য ১৯১৮ সালের ২ আগস্টের পরে জার্মানিতে ঢুকেছে তাদেরকে রাইখ অর্থাৎ রাষ্ট্র থেকে পাততাড়ি গুটাতে হবে;
  9. অধিকার ও দায়িত্বের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের সব নাগরিককেই সমান গণ্য করতে হবে;
  10. রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকেরই সর্বপ্রথম কর্তব্য হবে শারীরিক বা মানসিক কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখা,
  11. কাজ ছাড়া যেসব আয় হবে তার উচ্ছেদ;
  12. প্রত্যেকটা যুদ্ধজাতির কাছে জান ও মালের চেয়ে বিপুল কোরবানির দাবি নিয়ে উপস্থিত হয়। তার পরিপ্রেক্ষতে যুদ্ধের বদৌলতে ব্যক্তিগত ধনস্ফীতিকে জাতির বিরুদ্ধে অপরাধ বলে গণ্য করতে হবে। তাই যুদ্ধের সব মুনাফা বাজেয়াপ্ত করতে হবে;
  13. এ পর্যন্ত কোম্পানির আকারে যেসব ব্যবসা বাণিজ্য রয়েছে; তা জাতীয়করণ,
  14. পাইকারি ব্যবসার সব মুনাফা বন্টন করে দিতে হবে;
  15. বৃদ্ধদের অন্ন-বস্ত্র সংস্থানের ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি করতে হবে;
  16. একটি সুস্থ মধ্যবিত্তশ্রেণীর সৃষ্টি ও পরিপােষণ এবং অবিলম্বে পাইকারি বিক্রয়কেন্দ্র সামাজিকীকরণ করা হােক ও তাদেরকে অল্প দামে ছােটখাটো ব্যবসায়ীদের কাছে লীজ দেয়া হোক। সেই সাথে নিত্যপ্রয়ােজনীয় দ্রব্যাদির দোকানদারদের প্রতি পূর্ণ নজর দেয়া হােক;
  17. জাতীয় প্রয়োজনের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ভূমিসংস্কার এবং সমাজের স্বার্থে ক্ষতিপূরণ ছাড়াই ভূমি বাজেয়াপ্ত করা, কৃষিঋণ থেকে সুদ উৎখাত করা ও জমির ব্যাপারে সব ফটকাবাজি বন্ধ করার জন্য একটি আইন পাস করা হােক;
  18. যাদের কাজকর্ম সাধারণ স্বার্থের প্রতি ক্ষতিকর তাদের নির্মম শাস্তি দেয়া হোক
  19. রােমান আইনের পরিবর্তে সমগ্র জার্মানির জন্য একটা নতুন আইন পদ্ধতি প্রবর্তন করতে হবে;
  20. প্রগতির স্বার্থে প্রত্যেকটি সমর্থ এবং পরিশ্রেমী জার্মানের জন্যে উচ্চশিক্ষার দ্বার খুলে দেয়ার জন্য রাষ্ট্রকে জাতীয় শিক্ষা পদ্ধতিতে আমূল পরিবর্তন আনতে হবে।
  21. রাষ্ট্রকে খেয়াল রাখতে হবে যাতে জাতীয় স্বার্থের মান উন্নত হয় এবং এ জন্য তাকে মা ও শিশুর স্বার্থরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। শিশুশ্রম বন্ধ করে দিতে হবে, বাধ্যতামূলক খেলাধুলা ও বাধ্যতামূলক ব্যায়ামের মাধ্যমে শারীরিক দক্ষতা বাড়াতে হবে। শুধু তাই নয় যুবক যুবতীদের শারীরিক উন্নতির জন্য দেশে যে সমস্ত ক্লাব রয়েছে তাদেরকে ব্যাপক সাহায্য দিত হবে;
  22. বেতনভােগী সেনাবাহিনীর পরিবর্তে একটা জাতীয় সেনাবাহিনী গঠন করা হােক;
  23. একটি জার্মান জাতীয় প্রেস সৃষ্টি করতে হবে। জার্মান ভাষায় যেসব পত্রপত্রিকা প্রকাশিত হয় তাদের সম্পাদক ও অন্যান্য সহকারীদের জার্মানজাতির সদস্য হতে হবে। জার্মান নয় এই ধরনের পত্রপত্রিকা প্রকাশের পূর্বে রাষ্ট্রের বিশেষ অনুমতি নিতে হবে। যারা জার্মান নয় তাদেরকে আইনের মাধ্যমে অর্থানুকূল্য প্রদর্শন এবং সেই সূত্রে তাদের উপর প্রভাব বিস্তার করা থেকে বিরত রাখতে হবে। এই আইন অমান্যের শাস্তি হবে সংশ্লিষ্ট পত্রিকার বিলুপ্তি এবং এ ব্যাপারে দায়ী ব্যক্তির দেশান্তর। জাতীয় কল্যাণে সহযোগিতা করবে না এ ধরনের পত্রপত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ করে দিতে হবে।
  24. জার্মানজাতির নৈতিক অনুভূতির বিপক্ষে নয় এবং রাষ্ট্রের পক্ষে ক্ষতিকর নয় এই শর্তসাপেক্ষে সমস্ত ধর্মীয় সম্প্রদায়েরই স্বাধীনতা দিতে হবে;
  25. উপরে যা বলা হলাে তার বাস্তবায়নের জন্যে একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীয়সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

এই ইশতেহারটি তৎকালীন জার্মানির অস্থিতিশীল রাজনীতিতে নতুন আশার সঞ্চার করে। জার্মানির যুব সম্প্রদায় হিটলারকে তাদের স্বপ্নপুরুষ মনে করে নাৎসি দলের সাথে একাত্মতা ঘােষণা করে। নাৎসি পার্টিতে হিটলারের প্রভাব চূড়ান্ত পর্যায়ে চলে যায়, যা তাকে পরবর্তীকালে পৃথিবীর ইতিহাসে বিখ্যাত করে তোলে। ২৫ দফা ইশতেহার ঘােষণার পর নাৎসি পার্টিতে হিটলারের প্রভাব এত বৃদ্ধি পায় যে সেনাবাহিনীর চাকুরিতে ইস্তফা দিয়ে তিনি পার্টির সভাপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করতে বাধ্য হন। এখানে বলা প্রয়োজন হিটলারের জন্ম অস্ট্রিয়ায়। নিজেকে তিনি একজন ভাস্কর হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ভাস্কর হতে তিনি পারেননি। পরবর্তীকালে তিনি জার্মানির মিউনিখ শহরে যান ও ব্যাভেরিয়ার (জার্মানির একটি প্রদেশ) সেনাবাহিনীতে যোগ দেন। সৈনিক হিসেবে যুদ্ধে তিনি বেশ নামও করেন। ১৯২৩ সালে তিনি লুডেনডর্ফের সহযােগিতায় দেশের শাসনভার গ্রহণের চেষ্টা করেন। ব্যর্থ হয়ে তিনি অতঃপর জেলে যান। জেলে বসেই "Mein Kampf" গ্রন্থটি রচনা করেন, যা ১৯২৫ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। প্রচণ্ড ইহুদি ও সাম্যবাদবিরােধী হিটলার সংখ্যাগরিষ্ঠের শাসনের বিরােধী ছিলেন এবং জার্মানির জন্য যে "গণতন্ত্র প্রত্যাশা করেছিলেন, তা ছিল একনায়কতান্ত্রিক। তিনি বিশ্বাস করতেন জার্মানজাতির জন্য একজন শক্তিশালী নেতা' দরকার। এটা সত্য হিটলার তাঁর নীতি ও আদর্শ নিয়ে জার্মান পার্লামেন্টে বিজয়ী হয়েছিলেন এবং চ্যান্সেলেরও হয়েছিলেন। কিন্তু তাঁর যুদ্ধাকাঙ্ক্ষা ও পররাজ্য গ্রাসের কারণেই তিনি বিশ্বব্যাপী বিতর্কিত হয়েছিলেন। তিনি পরিণত হয়েছিলেন এক গণনায়কে। তাঁর রাজনীতিতে নেতিবাচক দিকটি বেশি থাকলেও দেশের জন্য কিছু ইতিবাচক দিকও ছিল।যেমন-

  1. ১৯৩৬ সালে জার্মানিতে উৎপাদন অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল;
  2. প্রতি নাগরিকের মােট আয় শতকরা ১৫ ভাগ বেড়ে গিয়েছিল;
  3. চতুর্থ পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় খাদ্য বস্ত্রে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করার লক্ষ্যে কর্মসূচি গৃহীত হলে জার্মানিতে কর্মচাঞ্চল্য দেখা গিযেছিল।

হিটলারের এই অর্থনৈতিক সাফল্যে তার নেতিবাচক দিকগুলাে চাপা পড়ে গিয়েছিল। যেমন

  1. ট্রেড ইউনিয়নগুলো ভেঙে দিয়ে লেবার ফ্রন্টের সাহায্যে হিটলার শ্রমিকদের একই বেতনে অনেক ঘণ্টা করে কাজ করাতেন;
  2. শ্রমিকদের ঘণ্টাপিছু বেতন কমে গিয়েছিল;
  3. খাদ্যদ্রব্যের মূল্য আগের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়েছিল;
  4. নাৎসি দল কোনাে কোনাে ক্ষেত্রে শ্রমিকদের বিনাবেতনে শ্রম দিতে বাধ্য করেছিল;
  5. বিদ্যালয়ে সৎ এবং নিরপেক্ষ শিক্ষার স্থলে নাৎসি শিক্ষা দেয়া হতাে;
  6. বিদ্যালয়ের ছাত্রদের নাৎসিবাদের দ্বারা মগজ ধােলাই করে তাদের স্বাধীন মতামত প্রকাশ বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল;
  7. ন্যায্য প্রতিবাদকে সন্ত্রাস দ্বারা দমন করায় কেউই প্রতিবাদ জানানাের সাহস পায়নি;
  8. জার্মানির অর্থনৈতিক পরিস্থিতি আসলে ভালাে হয়নি।

প্রচার দ্বারা জালিয়াতির আওতায় নেয়া হয়েছিল মাত্র। এভাবে হিটলার তার সর্বাত্মক রাষ্ট্র পরিচালনা করেন। ইতিহাসের কী নির্মম পরিহাস, ভাইমার রিপাবলিকের (১৯১৯-১৯৩৩) মূল স্পিরিট ছিল জার্মানিতে একটি সংসদীয় রাজনীতি প্রবর্তন করা। জনসাধারণের ভােটাধিকার ও একটি পার্লামেন্ট সেখানে গঠিতও হয়েছিল। কিন্তু হিটলার তা ব্যবহার করেছিলেন তাঁর নিজ স্বার্থে। তাঁর মৃত্যুর পরই জার্মানিতে সত্যিকার অর্থে গণতন্র বিকশিত হয়। যদিও সেখানে যুক্তরাষ্ট্রসহ মিত্রশক্তির সেনাবাহিনীর উপস্থিতি (পশ্চিম জার্মানি) ছিল, যা এখনও আছে। যুক্তরাষ্ট্রের সেনাবাহিনী জার্মানিতে গণতন্ত্র বিকাশে যথেষ্ট সাহায্য করে।

Next Post Previous Post