বাংলার রাজনৈতিক জীবনে দ্বৈতশাসনের প্রভাব

বাংলার রাজনৈতিক জীবনে দ্বৈতশাসনের প্রভাব আলোচনা কর।

বাংলার রাজনৈতিক জীবনে দ্বৈতশাসনে প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী । নিম্নে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

১. নবাবের ক্ষমতাহীন দায়িত্ব :

দ্বৈত শাসনব্যবস্থায় নবাবের দায়িত্ব ছিল। কিন্তু কোনো ক্ষমতা ছিল না। অর্থের জন্য তাকে কোম্পামির দয়ার উপর নির্ভর করতে হতো। তিনি ছিলেন পরিস্থিতির একজন নীরব দর্শণকমাত্র।

২. প্রশাসনিক জটিলতা বৃদ্ধি :

বাংলা, বিহার ও উড়িষ্যার অর্থনৈতিক দায়-দায়িত্ব কোম্পানির হাতে ন্যস্ত হওয়ায় কোম্পানির 'ফ্যাক্টর' ও বণিকরা রাতারাতি প্রশাসকে পরিণত হয়। এসব প্রশাসকদের ভারতীয় রাজস্ব রীতিনীতি সম্পর্কে কোনা ধারণা না থাকায় তারা ইংল্যান্ডের রীতিনীতি ভারতে প্রয়োগ করতে থাকেন। ফলশ্রুতিতে প্রশাসনিক জটিলতা বৃদ্ধি পায়।

৩. শাসনের নামে কুশাসন :

নিজামত ও কোম্পানির কর্মচারীরা নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করার প্রতি অধিকতর মনোযোগী হওয়ায় রাজ্য শাসনের নামে কুশাসন পূর্বের ন্যায় চলতে থাকে


৪. দুর্নীতির ব্যাপকতা :

দুর্নীতির ব্যাপকতা সম্পর্কে ইংরেজ ঐতিহাসিক কে (Kaye) বলেছেন "দ্বৈতশাসন বিশৃঙ্খলাকে আরাে জটিল করে তোলে এবং দুর্নীতিকে আরো গভীর করে তোলে।"

৫. কোম্পানির প্রভ়ুত্ব প্রতিষ্ঠা :

ক্লাইভ প্রবর্তিত দ্বৈতশাসন বাংলায় কোম্পানির প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠা করে । কেননা রাজ্যের প্রতিরক্ষার দায়িত্ব কোম্পানির সেনাবাহিনী ও রাজ্যের রাজনৈতিক প্রভুত্ব কোম্পানির কর্মচারীদের হাতে চলে যায়। তাছাড়া বৈদেশিক নিরাপত্তা ও অভ্যন্তরীণ শান্তি-শৃঙ্খলার জন্য নবাবকে কোম্পানির উপর নির্ভরশীল করে রাখা হয়।

Next Post Previous Post